
বেদের রাত্রি সূক্তই পরবর্তীকালে কালীর ধারার সৃষ্টি করেছে। শতপথ ব্রাহ্মনে ও ঐতরেয় ব্রাহ্মনে নির্ঋত দেবীর উল্লেখ পাওয়া যায়। বৈদিক সাহিত্যে কালীর নাম প্রথম পাই মুন্ডক উপনিষদে। সেখানে কালী যজ্ঞাগ্নির সপ্তজিহবার একটি। এখানে কালী আহুতি গ্রহণকারিনী অগ্নিজিহবা মাত্র। মহাভারতের সৌপ্তিক পর্বে দেখা যায় অশ্বত্থামা যখন পান্ডব শিবিরে গিয়ে নিদ্রিত
♦কালীর আবির্ভাব তিথিঃ->>
কালী বিলাসতন্ত্রে বলা হয়েছে –
কার্ত্তিকে কৃষ্ণ পক্ষে তু পক্ষদশ্যাং মহানিশি।
আবির্ভূতা মহাকালী যোগিনী কোটি ভিঃ সহা।।
অর্থাৎঃ কার্ত্তিক মাসের অমাবস্যার মহানিশিতে মহাদেবীর এই ভূ-মন্ডলে আবির্ভাব। এটাই তার আবির্ভাব তিথি। এদিন দীপাবলী বা দীপদান তথা দেওয়ালী রজনী। কার্ত্তিক অমাবস্যার রাতে দীপদানে আলোক মালায় প্রজ্জ্বলিত করে নিজেদের অন্ধকার থেকে আলোকে নিয়ে যাওয়ারই নামান্তর দীপাবলী। আলোর মাধ্যমে শক্তি সাধনায় নিজেকে পুণ্যালোকে আলোকময় করে তোলাই জগতের মূলে শক্তি সাধনার অন্তনির্হিত তাৎপর্য্যের সার্থকতা।
বৃহদারণ্যক উপনিষদে আমাদের অসৎ হতে সৎ -এ নিয়ে যাওয়ার জন্য, অন্ধকার থেকে আলোতে এবং মৃত্যু থেকে অমৃতত্বে যাওয়ার জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে। পরলোকগত স্বজন ও বন্ধুগণ যাতে ঐ সব ভয়ঙ্কর অন্ধকার অতিক্রম করে গন্তব্য স্থল অমৃতধামে যেতে পারেন তার জন্য ঐ দিন রাতে নদীর জলে জলন্ত প্রদীপ ভাসানোর প্রথা বাংলার কোন কোন জায়গায় দৃষ্ট হয়। আবার আশ্বিনের সংক্রান্তি থেকে কার্তিক মাসব্যাপী আকাশ প্রদীপ জ্বালানোর মাধ্যমে অশুভ শক্তি তাড়ানোর ব্যবস্থা এতে নিহিত রয়েছে। এই আলোক উৎসব প্রায় সারাদেশেই কোন না কোন ভাবে অনুষ্ঠিত হয়। ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, চেকোশ্লোভাকিয়া, চীন, জাপানসহ অনেক দেশে আসন্ন বিপদ তাড়াতে, অশুভ শক্তি দূরীকরণে, নতুন বছরের শুভ সূচনা করতে প্রয়াতদের অমৃতধাম যাত্রার পথ প্রদর্শকরূপে দীপাবলীর ন্যায় আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়ে থাকে। ক্রিস্টমাস ট্রির গায়ে যে আলো ঝোলানোর প্রথা দীপাবলীরই ভিন্নরূপ হতে পারে। পূরাণ এবং ইতিহাসের দৃষ্টিতে অনেক ক্ষেত্রে মনে করা হয় যে, কার্তিক কৃষ্ণা অমাবস্যার রাতে রাবণ বধ ও লঙ্কা বিজয় সম্পন্ন করে রামচন্দ্র সীতাদেবীকে নিয়ে অযোধ্যায় ফিরে আসাকে কেন্দ্র করে দেওয়ালী অনুষ্ঠান হয়। সবকিছু মিলিয়ে অন্ধকার থেকে আলোকমালায় প্রজ্জ্বলিত অনুষ্ঠানকে আলোর পথে যাত্রার সূচনাই দীপাবলী দেওয়ালী বা দিপান্বিতা অমাবস্যা।
কালী বিলাসতন্ত্রে বলা হয়েছে –
কার্ত্তিকে কৃষ্ণ পক্ষে তু পক্ষদশ্যাং মহানিশি।
আবির্ভূতা মহাকালী যোগিনী কোটি ভিঃ সহা।।
অর্থাৎঃ কার্ত্তিক মাসের অমাবস্যার মহানিশিতে মহাদেবীর এই ভূ-মন্ডলে আবির্ভাব। এটাই তার আবির্ভাব তিথি। এদিন দীপাবলী বা দীপদান তথা দেওয়ালী রজনী। কার্ত্তিক অমাবস্যার রাতে দীপদানে আলোক মালায় প্রজ্জ্বলিত করে নিজেদের অন্ধকার থেকে আলোকে নিয়ে যাওয়ারই নামান্তর দীপাবলী। আলোর মাধ্যমে শক্তি সাধনায় নিজেকে পুণ্যালোকে আলোকময় করে তোলাই জগতের মূলে শক্তি সাধনার অন্তনির্হিত তাৎপর্য্যের সার্থকতা।
বৃহদারণ্যক উপনিষদে আমাদের অসৎ হতে সৎ -এ নিয়ে যাওয়ার জন্য, অন্ধকার থেকে আলোতে এবং মৃত্যু থেকে অমৃতত্বে যাওয়ার জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে। পরলোকগত স্বজন ও বন্ধুগণ যাতে ঐ সব ভয়ঙ্কর অন্ধকার অতিক্রম করে গন্তব্য স্থল অমৃতধামে যেতে পারেন তার জন্য ঐ দিন রাতে নদীর জলে জলন্ত প্রদীপ ভাসানোর প্রথা বাংলার কোন কোন জায়গায় দৃষ্ট হয়। আবার আশ্বিনের সংক্রান্তি থেকে কার্তিক মাসব্যাপী আকাশ প্রদীপ জ্বালানোর মাধ্যমে অশুভ শক্তি তাড়ানোর ব্যবস্থা এতে নিহিত রয়েছে। এই আলোক উৎসব প্রায় সারাদেশেই কোন না কোন ভাবে অনুষ্ঠিত হয়। ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, চেকোশ্লোভাকিয়া, চীন, জাপানসহ অনেক দেশে আসন্ন বিপদ তাড়াতে, অশুভ শক্তি দূরীকরণে, নতুন বছরের শুভ সূচনা করতে প্রয়াতদের অমৃতধাম যাত্রার পথ প্রদর্শকরূপে দীপাবলীর ন্যায় আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়ে থাকে। ক্রিস্টমাস ট্রির গায়ে যে আলো ঝোলানোর প্রথা দীপাবলীরই ভিন্নরূপ হতে পারে। পূরাণ এবং ইতিহাসের দৃষ্টিতে অনেক ক্ষেত্রে মনে করা হয় যে, কার্তিক কৃষ্ণা অমাবস্যার রাতে রাবণ বধ ও লঙ্কা বিজয় সম্পন্ন করে রামচন্দ্র সীতাদেবীকে নিয়ে অযোধ্যায় ফিরে আসাকে কেন্দ্র করে দেওয়ালী অনুষ্ঠান হয়। সবকিছু মিলিয়ে অন্ধকার থেকে আলোকমালায় প্রজ্জ্বলিত অনুষ্ঠানকে আলোর পথে যাত্রার সূচনাই দীপাবলী দেওয়ালী বা দিপান্বিতা অমাবস্যা।
♦কালী পূজার প্রশস্ত সময় নির্ঘন্টঃ->>
রহস্যপূজা এবং সাধন রহস্যে বলা হয়েছে-
না দিবা পূজায়দ্দেবীং রাত্রৌ নৈব চ নৈবচ।
সর্বদা পূজয়ে দেবীং দিবা রাত্রৌ বিবর্জয়েৎ।।
অর্থাৎঃ দেবীকে দিনে ও না, রাত্রিতে ও না সর্বদা পূজা করবে।
রহস্যপূজা এবং সাধন রহস্যে বলা হয়েছে-
না দিবা পূজায়দ্দেবীং রাত্রৌ নৈব চ নৈবচ।
সর্বদা পূজয়ে দেবীং দিবা রাত্রৌ বিবর্জয়েৎ।।
অর্থাৎঃ দেবীকে দিনে ও না, রাত্রিতে ও না সর্বদা পূজা করবে।
♦রহস্যপূজায় বলা হয়েছে-
দিবাচার্দ্ধ প্রহরিকা চাদ্যন্তে পরমেশ্বরী।
ঋতু দন্ডাত্নিকা সা চ রাত্রিরুক্তা মনীষিভিঃ
ততো বৈ দশ নাড্যন্ত নিশা মহানিশা স্মৃতাঃ।
সর্বদা চ সমাখ্যাতা সর্ব সাধন কর্ম্মনি।।
দিবাচার্দ্ধ প্রহরিকা চাদ্যন্তে পরমেশ্বরী।
ঋতু দন্ডাত্নিকা সা চ রাত্রিরুক্তা মনীষিভিঃ
ততো বৈ দশ নাড্যন্ত নিশা মহানিশা স্মৃতাঃ।
সর্বদা চ সমাখ্যাতা সর্ব সাধন কর্ম্মনি।।
অর্থাৎঃ সূর্যাস্তের পর অর্দ্ধপ্রহর বা চারদন্ড সময় অর্থাৎ ৯৬ মিনিট সময়কে বলা হয় দিবা। তারপর ছয়দন্ড অর্থাৎ ১৪৪ মিনিট সময়কে বলা হয় রাত্রি। অর্থাৎ সূর্যাস্তের প্রথম দশ দন্ড অর্থাৎ ৪ঘন্টা দিবা ও রাত্রি। তারপর দশ দন্ডকাল অর্থাৎ ৪ ঘন্টা হচ্ছে নিশা ও মহানিশা। একই বলা হয় সর্বদা। এটাই দেবী পূজার প্রশস্ত সময়। কার্তিক মাসে সাড়ে পাঁচটায় সূর্যাস্ত। তারপর চার ঘন্টা বাদ দিয়ে পূজায় বসতে হবে এবং রাত্রি একটার মধ্যে পূজো সমাপ্ত করতে হবে। আবার রাত্রি দেড়টার পর সূর্যোদয় পর্যন্ত সময়কে বলা হয় দিবারাত্রি।
♦♦কালীর দ্বিবিধরূপঃ
♣ সংহার/ নাশিনীরূপঃ->> কালী সংহারমূর্ত্তি। কিন্তু এই সংহার নিষ্ঠুর ধ্বংস নয়। এই সংহার সংহরণ অর্থাৎ আপনার মধ্যে আকর্ষণ। সমুদ্রের তরঙ্গমালার উদ্ভব সমুদ্র থেকেই। আবার সেই তরঙ্গমালার লয়ও হয় সমুদ্র বক্ষে। সংহার তেমনই একটি ব্যাপার। এটি হলো তার নাশিনী শক্তি।
♦ সৃজনীরূপঃ আদ্যাশক্তি বিশ্বপ্রসবকারিনী মায়ের উদর থেকেই জগৎ প্রপঞ্চের সৃষ্টি। তখন তিনি সৃজনী শক্তি।
মা কালীর রূপের বর্ণনাঃ
করালবদনাং ঘোরাং মুক্তকেশীং চতুর্ভুজাম্।
কালিকাং দক্ষিণাং দিব্যাং মুন্ডমালা বিভূষিতাম্।।
সদ্যন্নিশিরঃ খড়গ বামাধোর্দ্ধ করাম্বুজাম।
অভয়ং বরদঞ্চৈব দক্ষিণোর্দ্ধাধপানিকাম।।
মহামেঘ প্রভাং শ্যামাং তথা চৈব দিগম্বরীম্।
কন্ঠাবসক্ত মুন্ডালী গলদ্ রুধির চর্চ্চিতাম্।।
অর্থাৎঃ-
দক্ষিণা কালিকা দেব করালবদনা, ঘোরা, মুক্তকেশী চতুর্ভুজা, দিব্যা, মুন্ড মালা বিভুষিতা। তাঁর বামোর্দ্ধ করে খড়গ আর বামোর্দ্ধ করে খড়গ দ্বারা সদ্য, ছিন্নমুন্ড, দক্ষিনোর্ধ করে তিনি অভয়দাত্রী এবং দক্ষিনার্ধ করে তাঁর বরমুদ্রা। ঘন মেঘের প্রভার মতো তাঁর রং। তিনি দিগম্বরী, তাঁর গলদেশের মুন্ডমালা থেকে রক্তধারা ঝরে পড়ছে। শবসমূহের হস্তসমূহ দ্বারা তার কটিমেখলা রচিত এবং তিনি হাস্যমুখী। তিনি শবরুপী মহাদেবের বক্ষোপরি অবস্থিতা। সুখ প্রসন্নবদন, তাঁর মুখমন্ডল প্রস্ফুটিত পদ্মহাস্যে সমুজ্জ্বল।।
করালবদনাং ঘোরাং মুক্তকেশীং চতুর্ভুজাম্।
কালিকাং দক্ষিণাং দিব্যাং মুন্ডমালা বিভূষিতাম্।।
সদ্যন্নিশিরঃ খড়গ বামাধোর্দ্ধ করাম্বুজাম।
অভয়ং বরদঞ্চৈব দক্ষিণোর্দ্ধাধপানিকাম।।
মহামেঘ প্রভাং শ্যামাং তথা চৈব দিগম্বরীম্।
কন্ঠাবসক্ত মুন্ডালী গলদ্ রুধির চর্চ্চিতাম্।।
অর্থাৎঃ-
দক্ষিণা কালিকা দেব করালবদনা, ঘোরা, মুক্তকেশী চতুর্ভুজা, দিব্যা, মুন্ড মালা বিভুষিতা। তাঁর বামোর্দ্ধ করে খড়গ আর বামোর্দ্ধ করে খড়গ দ্বারা সদ্য, ছিন্নমুন্ড, দক্ষিনোর্ধ করে তিনি অভয়দাত্রী এবং দক্ষিনার্ধ করে তাঁর বরমুদ্রা। ঘন মেঘের প্রভার মতো তাঁর রং। তিনি দিগম্বরী, তাঁর গলদেশের মুন্ডমালা থেকে রক্তধারা ঝরে পড়ছে। শবসমূহের হস্তসমূহ দ্বারা তার কটিমেখলা রচিত এবং তিনি হাস্যমুখী। তিনি শবরুপী মহাদেবের বক্ষোপরি অবস্থিতা। সুখ প্রসন্নবদন, তাঁর মুখমন্ডল প্রস্ফুটিত পদ্মহাস্যে সমুজ্জ্বল।।
জীবনের সাথে এই শক্তির খেলা আর্য্য ঋষিগণ তাঁদের জ্ঞানদীপ্ত উপলব্ধির দ্বারা প্রত্যক্ষ করেছেন। এই সৃষ্টিতে প্রকৃতিরূপা মাতৃশক্তির রূপ কল্পনা কালী মূর্তিতে। শক্তির আধারভূতা দেবী শ্রী শ্রী কালীমাতা সকলের পরিত্রাণ করুক, সকলের জীবনে কালীমায়ের মূর্তির তাৎপর্য প্রাণবন্ত হোক, কর্মে সাত্ত্বিকতা আসুক- এই প্রার্থনা রাখি।
আর্য্যঋষিদের দেবদেবী কল্পনায় অধিকাংশ আধ্যাত্মিক বৈদিক, লৌকিক, আঞ্চলিক দেবদেবীর বাহনরূপে পশুপাখির অবস্থান নির্ণয় করেছের। কিন্তু ব্যতিক্রম হলো দেবী কালিকার ক্ষেত্রে। এখানে দেবীর বাহনরূপে শিবা, শিব, শব কাকে বাহন নির্দিষ্ট করেছেন, তাত্ত্বিক দৃষ্টিতে ধরা পড়ে না। পূর্বেই উল্লেখ করেছি দেবীকে শিবারূঢ়া বলতে শিবের উপর অবস্থিত বোঝায়। অপর পক্ষে শিবা শব্দে শৃগাল বোঝায়। এ কারণে অনেক স্থলে মায়ের মূর্তির সাথে শৃগালকেও দেখানো হয়। কিন্তু মায়ের সাথে শৃগালের যুক্ততা যুক্তিগ্রাহ্য নয়। শবারূঢ়া বা শিবারূঢ়া যা-ই বলি শব হয় শক্তিহীনতায় আর শিব হয় মঙ্গলকারী শক্তিমানতায়। উভয়ই শক্তির অবস্থান নির্ণয় করে। যে শক্তি সবংত্র বিরাজিত নানরূপে কার্যকারিতায় তাঁর বাহন নির্ধারণ না করাই যুক্তিগ্রাহ্য বলে ঋষিগণ এ বিষয়ে দৃষ্টি দেননি।
কালীবীজ জপলে ও তদনুযায়ী গুরুপাদিষ্ট মতে ক্রিয়া করলে তত্ত্বময়ী কালী সাধকের কাছে উপস্থিত হয়ে যান। কৃষ্ণানন্দ, রামপ্রসাদ, রামকৃষ্ণ, বামাক্ষেপা প্রমুখ সাধকের কালী দর্শনে মুগ্ধ তন্ময়। ‘‘প্রত্যয় হয় প্রত্যক্ষ হলে।’’ সমস্ত যোগতত্ত্ব কথা গুরুবক্তগম্য। সকল তত্ত্ব নিজের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে যদি গুরুপাদিষ্ট মতে সাধন ভজন করা যায়। মানুষকে সাধনমুখী, সত্যমুখী করার জন্যই পূজার ও দেব-দেবীর মূর্তির অবতারণা।।
আর্য্যঋষিদের দেবদেবী কল্পনায় অধিকাংশ আধ্যাত্মিক বৈদিক, লৌকিক, আঞ্চলিক দেবদেবীর বাহনরূপে পশুপাখির অবস্থান নির্ণয় করেছের। কিন্তু ব্যতিক্রম হলো দেবী কালিকার ক্ষেত্রে। এখানে দেবীর বাহনরূপে শিবা, শিব, শব কাকে বাহন নির্দিষ্ট করেছেন, তাত্ত্বিক দৃষ্টিতে ধরা পড়ে না। পূর্বেই উল্লেখ করেছি দেবীকে শিবারূঢ়া বলতে শিবের উপর অবস্থিত বোঝায়। অপর পক্ষে শিবা শব্দে শৃগাল বোঝায়। এ কারণে অনেক স্থলে মায়ের মূর্তির সাথে শৃগালকেও দেখানো হয়। কিন্তু মায়ের সাথে শৃগালের যুক্ততা যুক্তিগ্রাহ্য নয়। শবারূঢ়া বা শিবারূঢ়া যা-ই বলি শব হয় শক্তিহীনতায় আর শিব হয় মঙ্গলকারী শক্তিমানতায়। উভয়ই শক্তির অবস্থান নির্ণয় করে। যে শক্তি সবংত্র বিরাজিত নানরূপে কার্যকারিতায় তাঁর বাহন নির্ধারণ না করাই যুক্তিগ্রাহ্য বলে ঋষিগণ এ বিষয়ে দৃষ্টি দেননি।
কালীবীজ জপলে ও তদনুযায়ী গুরুপাদিষ্ট মতে ক্রিয়া করলে তত্ত্বময়ী কালী সাধকের কাছে উপস্থিত হয়ে যান। কৃষ্ণানন্দ, রামপ্রসাদ, রামকৃষ্ণ, বামাক্ষেপা প্রমুখ সাধকের কালী দর্শনে মুগ্ধ তন্ময়। ‘‘প্রত্যয় হয় প্রত্যক্ষ হলে।’’ সমস্ত যোগতত্ত্ব কথা গুরুবক্তগম্য। সকল তত্ত্ব নিজের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে যদি গুরুপাদিষ্ট মতে সাধন ভজন করা যায়। মানুষকে সাধনমুখী, সত্যমুখী করার জন্যই পূজার ও দেব-দেবীর মূর্তির অবতারণা।।